যাঁরা চাইছেন এ বছর ওজন ঝরিয়ে একটু ছিপছিপে চেহারায় ফিরে গিয়ে একটা নতুন লুকস সামনে আনতে তাঁদের জন্য একটা দারুণ রেসিপির হদিশ দিয়েছেন কলকাতার জনপ্রিয় ক্যাফে 'চায় ব্রেক'-এর কর্পোরেট শেফ সুদীপ্ত সাহা।
পদটির নাম মেড স্যালাড। লাইট মিলের জন্য এটি একটি দারুণ সুস্বাদু নিরামিষ পদ। এটি খাদ্যগুণ ও পুষ্টিতেও ভরপুর। রয়েছে প্রচুর শাক-সবজি-ফল ও লোভনীয় সব স্বাদ। ক্যালোরিও অত্যন্ত কম। রেসিপিটি জেনে নিন...
প্রথমে তৈরি করতে হবে হুমুস। এটি তৈরির জন্য চাই,
সেদ্ধ ছোলা ১০০ গ্রাম
রসুন ১৫ গ্রাম
অলিভ অয়েল ৩০ মিলিলিটার
কালো মরিচ ২.৫ গ্রাম
তাহিনি পেস্ট ৩০ গ্রাম (সাদা তিল বাটা)
স্বাদ মতো নুন
মিক্সিতে একসঙ্গে সব দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন।
এবার তৈরি করতে হবে ফালাফেল
সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন ১২৫ গ্রাম ছোলা
রসুন ২০ গ্রাম
ধনেপাতা ১০ গ্রাম
পার্সলে পাতা ১০ গ্রাম
লেবুর রস ৫ মিলিলিটার
নুন
ব্লেন্ড করে নিন। তবে পাতলা হতে না দিয়ে ধরে ধরে টিক্কি তৈরি করুন ও ভেজে নিন।
স্যালাড ড্রেসিং
কমলালেবুর রস ৫০ মিলিলিটার
লংকা ২টি, কুচি করা
ধনেপাতার ডাটা ১০ গ্রাম
তেল ১৫ মিলিলিটার
নুন
একসঙ্গে দিয়ে ব্লেন্ড করে একটি কাচের জারে ঢেলে ফ্রিজে রাখতে হবে।
স্যালাড
লেটুস পাতা ৫০ গ্রাম
হুমুস ৫০ গ্রাম
ফালাফেল টিক্কি ৩টি
বেদানার কয়েকটি বীজ
বিটের চিপস ২-৩টি
সর্ষের দানা ১ টেবিলচামচ
লাল লংকার গুঁড়ো
অলিভ অয়েল
কীভাবে সাজাবেন
স্যালাড মিক্স বোলে লেটুস পাতা সাজান। প্লেটের উপর হুমুস ঢেলে দিন। উপর দিয়ে ছিটিয়ে দিন লাল লংকার গুঁড়ো এবং সামান্য অলিভ অয়েল। একদিকে ফালাফেলগুলি সাজিয়ে দিন। উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন বেদানার কয়েকটি বীজ, বিটের চিপস ও সামান্য
সর্ষের দানা। চাইলে চিজের টুকরোও দিতে পারেন।
'চায় ব্রেক'-এর সুস্বাদু মেড স্যালাড এবার বানান আপনিও, রহস্যফাঁস শেফের!
নলেন গুড় …সুমিত দে
নলেন গুড়ের মিষ্টির সন্ধানে মহানগরে শীতের মরসুমে নিয়মিত অতিথি নলেন গুড়ের মিষ্টি। এ বার কী নতুন সংযোজন সেখানে? লিখলেন সুমিত দে গলানো সোনা। নলেন গুড় তো নয়, যেন শীতের 'সোনা'। চকচকে, সোনালি। ঝরে পড়লেই মনে হয় চামচে খাই, চুমুকে খাই। 'এমনি এমনি খাই'। তা এই শীতে কীসের চমক থাকছে নলেন গুড়ের মিষ্টিতে? নলেন গুড়ের মিষ্টিতে এখন কী অভিনবত্ব আসছে কলকাতায়? কী রকম বিবর্তন? 'নকুড়'-এর পাশাপাশি 'ভীমচন্দ্র নাগ', 'বলরাম মল্লিক', 'কে সি দাশ'-এর মতো শহর কলকাতার শতাধিক বছরের বেশি পুরনো মিষ্টির দোকান ঘুরে বোঝা গেল, এখন আর ছানা দিয়ে মিষ্টি গড়তে, শুধুমাত্র 'ওয়ান অ্যান্ড ওনলি' নলেনের উপর ভরসা রাখছেন না তাঁরা। যার জন্য কোনও দোকানি নলেন গুড়ের সন্দেশে ভরছেন নারকেল-মালাই-কাজু। কেউ সন্দেশে দিচ্ছেন ক্রিম, নানা ফ্লেভার। 'জানেন বছর কুড়ি আগেও নদীয়ার কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া থেকে যে গুড় আসত, তার গন্ধে ম-ম করত দোকান। এখন অত খেজুর গাছও নেই, গুড় বানানোর ভালো কারিগরও নেই। ফলে একদিকে ভালো গুড়ের অভাব, অন্যদিকে খেজুর গাছ কমে যাওয়ায়, মিলছে চিনি-মেশানো গুড়। তাই দেখে-বুঝে নিতে হয়। নতুন গুড়ের মিষ্টিতে অভিনবত্বর কথা ভাবতে হয়।' আক্ষেপের সুর প্রতীপ নন্দীর গলায়। হেদুয়ার কাছে তাঁদের দোকান 'গিরীশ চন্দ্র দে, নকুড় চন্দ্র নন্দী'। ১৭৫ বছরের পুরনো। কোনও রসের আইটেম নয়, শুধু ছানার সন্দেশের জন্যই প্রসিদ্ধ দোকান। শুনে হঠাৎ মনে পড়ে নরেন্দ্রনাথ মিত্রর 'রস' গল্প এবং তার ভিত্তিতে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত 'সওদাগর' ছবি। মোতির (অমিতাভ) প্রথম বউ মেহজুবিনের (নূতন) হাতের কেরামতিতে যে গুড় হয়ে ওঠে সুস্বাদু 'মোতি কা গুড়', সেই একই গুড় তাঁর দ্বিতীয় বউ ফুলবানুর (পদ্মা খান্না) হাতে পড়ে হয়ে ওঠে স্বাদহীন। প্রায় ১৯৩ বছরের দোকান 'ভীমচন্দ্র নাগ'। দোকান-মালিক প্রতাপ নাগ দোকানে বসে বলছিলেন, 'আমাদের দোকানে বরাবরই ছানা আর নতুন গুড়ের মনোরঞ্জন, শাঁখ সন্দেশ, জলভরা তালশাঁস-কাঁচা গোল্লার চাহিদা। কিন্তু নতুনত্ব আনতে এখন করছি নলেন গুড়ের পান সন্দেশ। যে সন্দেশের ভিতরে থাকে কুচি-কুচি কাজু। এ ছাড়া করছি গুড়ের বরফি, নলেন গুড়ের মুড়কি।' ১৭৫ বছরের দোকান 'নকুড়' দোকান-মালিক প্রতীপ নন্দী দোকানে বসে তথ্য দিলেন, 'দোকানের শাঁখ সন্দেশ, কাঁচা গোল্লা, জলভরা তালশাঁস, কস্তুরী, মৌসুমী সন্দেশ বরাবরই হট কেক।' দোকানের শো-কেসে সাজানো নলেন গুড়ের 'শচীন-সৌরভ'! গোলাকার হাল্কা মিষ্টির 'সৌরভ' ২০, মাঝে মালাই সরের স্টাফিং দেওয়া 'শচীন' ২৫। এ গুলো অবশ্য সচিন-সৌরভরা খেলার সময়ের ভাবনা। আর আছে সেমি-পিঠে সন্দেশ 'মৌসুমী'। নলেন গুড়ের যে পিঠে-সন্দেশের ভিতরে থাকে নারকেলের স্টাফিং। এ ছাড়া আরেক চমক 'মনোহরা'। জনাইয়ের জনপ্রিয় 'মনোহরা'-র অনুকরণেই এই সন্দেশ। তবে এতে চিনির বদলে মিশেছে গুড়। তাই দোকানের মনোহরা সাদা নয়। লাল। প্রায় ১৪০ বছরের দোকান, যদুবাজারের 'বলরাম মল্লিক'। দোকান-মালিক সুদীপ মল্লিক দোকানে বসে জানালেন, 'আমাদের গুড় আসে বসিরহাট-নদীয়া-সিঙ্গুর থেকে। তবে চাহিদা বাড়ায়, এখন আসছে বাঁকুড়া-নতুন বাজার-শিয়ালদহ থেকেও।' সেই চাহিদা মেনেই দোকানের কাঁচাগোল্লা-শাঁখ সন্দেশ-জলভরা তালশাঁস-মৌসুমী-অমৃতপাতুড়ির পাশাপাশি, সুদীপের হাত ধরে দোকানে এসেছে এক অভিনব চমক 'বেকড রসগোল্লা'। যা আজও হট-কেক। সেই চমকের ধারাই জারি রেখে দোকানে মেলে নলেন গুড়ের নানা আইটেম। কলাপাতার ভিতর সন্দেশ-রসগোল্লা দিয়ে স্টিমে দেওয়া নতুন গুড়ের 'অমৃত পাতুড়ি', ভিতরে খেজুর দিয়ে নলেন গুড়ের পাকে তৈরি 'এলিকজির'। দু-তিন রকমের ক্রিম সন্দেশ, ডিম ছাড়া কেকের রসালো আইটেম নলেন গুড়ের 'সুফ্লে'। সুফ্লের এখন খুব ভালো বাজার। আর এক সন্দেশের বিখ্যাত দোকান নলিন দাশের ওখানে যেমন মাখা নলেন গুড়ের সন্দেশ থাকে। বা রোল সন্দেশ। কোথাও কোথাও গুজিয়াও পাওয়া যায় নলেন গুড়ের। গোল পার্ক গাঙ্গুরামে গিয়ে দেখা গেল, নলেন গুড়ের মিষ্টির 'দৌরাত্মে' তাদের এককালীন জনপ্রিয় মিষ্টি 'ইন্দ্রাণী' তৈরি আপাতত বন্ধ। ধর্মতলার 'কে সি দাশ' তার রসগোল্লার জন্য খ্যাত হলেও, দোকানের শো-কেসে নতুন বছরে শোভা পায় গুড় শাঁখ, গুড় তালশাঁস, গুড় জলভরা, কড়া পাকের তালশাঁস। তবে নলেন গুড় সিজিনাল। মাস দুই-তিনেকের বেশি থাকে না। তাই দোকানের সাদা রসগোল্লা টিনে প্যাক হয়ে সারা বিশ্ব ভ্রমণ করলেও, নলেন গুড়ের রসগোল্লা কখনও টিন-বন্দী হয় না। মেলে শুধু দোকানেই। ছোট বড়ো অধিকাংশ দোকানেই এখন নলেন গুড়ের রসগোল্লার জয়ধ্বনি। বছরের এই সময়টায় কলকাতার বিখ্যাত সাদা রসগোল্লা হেরে যায় নিজের শহরেই। গুড়ের কাছে, নলেন গুড়ের রসগোল্লার কাছে।
মধুর রসগোল্লা লঙ্কার ঝালে চমৎকারী
রসগোল্লা, কিন্তু ঝাল। শুনে আঁতকে ওঠার উপায় নেই। গত দু' বছর ধরে মেদিনীপুরের একটি মিষ্টির দোকানে এমনই ঝাল রসগোল্লা তৈরি হচ্ছে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। দেখতে আর পাঁচটা রসগোল্লার মতোই। কিন্তু রসগোল্লার রসের দিকে তাকালেই বোঝা যায় ফারাকটা। রসে রসগোল্লার সঙ্গে ভাসছে দু'ভাগে চেরা লঙ্কা। আর পাঁচটার মতো ঝাল রসগোল্লা মুখে দিলে মিষ্টির স্বাদ মিলবে বটে। তার চেয়ে ঢের বেশি মিলবে ঝালের স্বাদ। ক্রেতারা পছন্দও করছেন রসগোল্লার এই নতুন স্বাদবাহার।
মেদিনীপুরে বেড়াতে গিয়ে অনেকেই ফেরার সময়ে খুঁজে পেতে কিনে নিচ্ছেন এই ঝাল রসগোল্লা। কলকাতার বেহালা থেকে মেদিনীপুরে চার্চের মেলায় এসেছিলেন পৌলমী সিনহা এবং প্রশান্ত সিনহা। রবিবার ফেরার সময়ে মেদিনীপুর শহর চষে ফেলেন ঝাল রসগোল্লার খোঁজে। অবশেষে চার্চ স্কুলের সামনের একটি দোকান থেকে ত্রিশটি ঝাল রসগোল্লা কিনতে পেরে স্বস্তি। পৌলমী বলেন, 'মেদিনীপুরের ঝাল রসগোল্লার নাম অনেক শুনেছি। তাই একটু চেখে দেখতে কয়েকটা কিনে নিলাম।' স্বাদে ফারাক আনতেই যে এই ঝাল রসগোল্লার আমদানি, সে কথা অবশ্য অস্বীকার করেননি মেদিনীপুর জেলা মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সম্পাদক সুকুমার দে। তিনি বলেছেন, 'মেদিনীপুরে নানা ধরনের রসগোল্লা পাওয়া যায়। কেশর রসগোল্লা, গাজর রসগোল্লা, সুগার ফ্রি রসগোল্লা। অনেকে ঝাল রসগোল্লাও তৈরি করছেন। ক্রেতাদের চাহিদার সঙ্গে তাল মেলানো ছাড়া আর কী!'
কথিত আছে, ১৮৪৫ থেকে ১৮৫৫-র মধ্যে ফুলিয়ার হারাধন ময়রা তাঁর শিশুকন্যার বায়না মেটাতে ফুটন্ত চিনির রসে কাঁচা ছানার গোলা ফেলে এক নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করেন। তার পরে রসগোল্লা নিয়ে বাঙালি কম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি। আম, মধু, নলেন গুড়, কেশর, গাজর-সহ নানা ধরনের রসগোল্লা তৈরি হয়েছে। আবার রসগোল্লা নিয়ে বাংলা ও ওডিশার বিবাদ এখন আর নতুন কাহিনি নয়। শেষ পর্যন্ত বাংলারই যে জয় হয়েছে সেটাও সকলের জানা। কিন্তু বাঙালিই যে রসগোল্লার প্রকৃত কারিগর সেটা যেন ঝাল রসগোল্লা তৈরিতেও নতুন করে প্রমাণ হল।
মিষ্টি ব্যবসায়ীদের যুক্তি, চিনির রসে ডোবানো রসগোল্লা নিয়ে এখন অনেকেরই নানা আপত্তি। সুগারের সমস্যা তো রয়েছেই। তার সঙ্গে চিকিৎসকেরাও অনেককে চিনি খাওয়া একদম ছেড়ে দিতে বলছেন। ফলে ক্রেতা ধরে রাখতেই রসগোল্লা নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে নানা 'গবেষণা' চলছে। মেদিনীপুরে ঝাল রসগোল্লা তৈরি প্রথম শুরু করেন অরিন্দম সাউ নামে এক মিষ্টি ব্যবসায়ী। তার দোকানের নাম ধরে রসগোল্লার নাম হয় রাধাকান্তের রসগোল্লা। পরে অনেক মিষ্টি ব্যবসায়ীই সেই পথ ধরেন। এখন মেদিনীপুরে কেউ বেড়াতে গিয়ে ঝাল রসগোল্লা কিনছেন না, এমনটা প্রায় ঘটেই না। ঝাল রসগোল্লার আবিষ্কারক অরিন্দম সাউ বলেন, 'বছর দু'য়েক আগে ঝাল রসগোল্লা তৈরি ও বিক্রি শুরু করি। তার আগে চিনি, নলেন গুড়, কেশর, গাজর, আম দিয়েও রসগোল্লা তৈরি করতাম। এখন মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হচ্ছে। তাই আমরাও বৈচিত্র আনার চেষ্টা করছি।' একটি ঝাল রলগোল্লার দাম দশ টাকা। মেদিনীপুরের বাসিন্দা প্রণতি মিত্র বলেছেন, 'ঝাল রসগোল্লা আমি খেয়ে দেখেছি। অন্যান্য রসগোল্লার চেয়ে আমার কিন্তু এই ঝাল রসগোল্লাই বেশি ভাল লাগে।' তাই ঝাল রসগোল্লা এখন আর 'কাঁঠালের আমসত্ত্ব' নয়। বাস্তব। চেখে দেখবেন নাকি?
আরও পড়ুন: 'চায় ব্রেক'-এর সুস্বাদু মেড স্যালাড এবার বানান আপনিও, রহস্যফাঁস শেফের!
চিংড়ি বনাম ইলিশ! দ্বন্দ্ব ভুলে স্বাদের ঐতিহ্যে মাতুন ইছামতীতে
তবে, আর চিন্তা নেই মায়ের হাতের সুস্বাদু নানা খাবারের সন্ধান নিয়ে এসেছে ইছামতী। পরিবারের সকলে বা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে অনায়াসেই আসা যেতে পারে ১৬, মারকুইজ লেন এসপ্ল্যানেডের এই রেস্তোরাঁয়। ২৫০০ স্কোয়্যারফিট এরিয়ায় এই রেস্তোরাঁয় রয়েছে সুন্দর বসার ব্যবস্থা। নানা রকমের আলো, সুন্দর করে সাজানো রেস্তোরাঁয়ায় মিলবে বাঙালি আতিথেয়তা। মুলত এপারবঙ্গ ও ওপারবঙ্গের মেলবেন্ধন ঘটেছে রেস্তোঁরার কিচেনে। সুতরাং রান্নাঘরে যেমন মিলবে চিংড়ি তেমনি আবার ইলিশ। সুতরাং বাঙালির চিরকালীন আবেগ ঝগড়া বির্সজন দিয়ে জমিয়ে হবে রসনাতৃপ্তি।
পাবেন কচুপাতায় চিংড়ি, চিতল মাছের মুইঠ্যা, কাতলা ফ্রাই, মটন ভুনা খিচুড়ি, খাসির পায়া, শুটকি ভরতা, লইঠ্যা ভরতা-সহ আরও লোভনীয় নানা পদ। সকালে মিলবে জলখাবার। বাংলাদেশীরা যাকে নাস্তা বলে থাকে। রোজ সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে। 'জনের খেতে খরচ মোটামুটি ৫০০ টাকার মতো। শীতের ছুটি থাকতে থাকতে একবার ঢুঁ মারবেন নাকি এই ক্যাফেতে?
আরও পড়ুন: 'চায় ব্রেক'-এর সুস্বাদু মেড স্যালাড এবার বানান আপনিও, রহস্যফাঁস শেফের!
পিঠের আমি পিঠের তুমি
বাইরে শীতের আমেজ। আর ঘরের মধ্যে নারকেল, নতুন গুড়ের সুঘ্রাণ। আজ বাদে কাল সংক্রান্তি যে! নানা রকমের পিঠ-পুলি খাওয়ার সময় এটাই। সে যতই গুড়ের আকাল হোক বা সময়ের অভাব, বছরের এই বিশেষ দিনে পিঠে খাওয়া বাঁধা। বানাতে পারেন না? কেনাই সই। তা বলে তো আর খাওয়াটা বাদ দেওয়া যায় না! কী বললেন? গুড় আর দুধ সহ্য হয় না? তারও স্বাস্থ্যকর উপায় আছে বই কী! শুধু মনে থাকতে হবে পিঠে-পুলি খাওয়ার অদম্য ইচ্ছে। তা হলে দেখবেন বাকিটা সহজ হয়ে গিয়েছে।
পাটিসাপটা, চিতই পিঠে, আসকি পিঠে, তেলের পিঠে, কাঁকন পিঠে, গোকুল পিঠে, ভাপা পিঠে, নোনতা পিঠে-তালিকা শেষ হওয়ার নয়। এখন আবার স্বাস্থ্য সচেতন ভোজন রসিকদের জন্য পাবেন বেকড পাটিসাপটা, সয়া-আমন্ড পাটিসাপটা, ওটস পাটিসাপটা আরও কত কী! শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে এখন পিঠের জন্যই আলাদা কাউন্টার। পিঠের মেলাও শুরু হয়েছে নানা পাড়ায়।
শেফ রুকমা দাক্ষী বলছেন, 'ছোটবেলায় বাবা গোবিন্দভোগ চাল কিনে আনতেন। সেটা গুঁড়ো করে তবে পিঠে হত। এখন তো গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো কিনতেই পাওয়া যায়।' আর তার জন্যই সহজ হয়ে গিয়েছে পিঠে বানানোও। দোসা, ইডলির মতো বছরের এই বিশেষ সময়ে কিছু ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পেয়ে যাবেন পাটিসাপটার মিক্সও। নারকেল কোরানোরও ঝক্কি নেই আর। কোরানো নারকেলও পাওয়া যায় বাজারে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নেড়ে গুড়-নারকেলের ছেই বানানো? তারও দরকার ফুরিয়েছে। মাইক্রোওয়েভ আভেনে দিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন দুটো মিলেমিশে গিয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকলে কিন্তু বানানোই যায় পিঠে-পুলি।
শুধু এ বাংলা নয়, বাংলাদেশেও কিন্তু এই শীতের সময় পাওয়া যায় নানা ধরনের পিঠে। 'পিঠে এখানে অনেকটা স্ট্রিট ফুডের মতো বিক্রি হয় শীতকালে', বক্তব্য বাংলাদেশের শেফ আলপনা হাবিবের। রকমফেরও বেশি রয়েছে বাংলাদেশের পিঠেতেই। সে কথা এক বাক্যে মেনে নিলেন রুকমা দাক্ষীও। 'বাংলাদেশে পিঠে-পুলির ভ্যরাইটি বেশি। তবে এখানেও যে শুধু মিষ্টি পিঠে হয় এমনটা নয়। শীতের নানা সব্জি দিয়ে নোনতা পিঠের চলও রয়েছে', বলছেন তিনি। শেফ কিংশুক কুণ্ডুর মতে, এ বাংলায় পিঠের সঙ্গে শুধু নারকেল, গুড় বা নিরামিষ সব্জি নয়, বিভিন্ন আমিষ ভর্তাও যথেষ্ট জনপ্রিয়। আলপনা বলছেন, 'চিতই পিঠের সঙ্গে আমরা শুঁটকি ভর্তা বা আলু ভর্তা খাই। মাংস দিয়েো খাওয়া হয় অনেক সময়। আবার ভাপা পিঠে নারকেল, গুড় আর অনেক সময় ক্ষীর দিয়ে তৈরি হয়। এ ছাড়া দুধ-পুলি তো আছেই।' রুকমা আবার ক্ষীরের পিঠে তেমন পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে নারকেল-গুড়ই ভরসা।'
কিন্তু কারও যদি নারকেল, দুধ, ক্ষীর-সবেতেই অ্যালার্জি থাকে? তিনি কি পিঠে পাবেন না? শেফ অপরাজিতা ঘোষ বলছেন, 'সয়া-আমন্ড পাটিসামপটা খেতে পারেন তাঁরা। এতে সয়া মিল্ক আর আমন্ড মিল্ক ব্যবহার করা হয় দুধের পরিবর্তে। চালের সঙ্গে ব্যবহৃত হয় মুগ ডালও।' ঘি বা সাদা তেলে ভাজা পিঠে এখন অনেকেই খেতে চান না। তাই বেকড পিঠেও কিন্তু স্বাস্থ্যকর বিকল্প। শীতের সব সব্জি দিয়ে ভাপানো পিঠেও কিন্তু খেতে পারেন স্বাস্থ্য সচেতন হলে।
ছোটবেলায় কোন পিঠে-পুলি প্রিয় ছিল? বা বলা ভালো কোন পিঠের নাম শুনলেই, গন্ধ পেলেই ছোটবেলাটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে? 'পাতিল ভাপা', একটুও না ভেবে বললেন আলপনা। 'এই পিঠে অনেকগুলো লেয়ারে বা স্তরে তৈরি হত। প্রচুর সময় নিয়ে স্টিমারে ধীরে ধীরে তৈরি হত এই পিঠে। আমার মাসি খুব ভালো বানাতেন পাতিল ভাপা। রান্না হয়ে গেলে কেকের মতো কেটে পরিবেশন করা হত এই পিঠে। বাড়িতে লোকজন এলে বা বিদেশ থেকে যখন আত্মীয়স্বজনরা আসতেন, এরকম নানা পিঠে-পুলি হত', বলছেন আলপনা। 'নোনতা ম্যারা পিঠে, মুগ ডালের ভাজা পিঠে আর তেলের পিঠে। আরও অনেক কিছুই আছে। এগুলো ছোটবেলাতে খেয়েছি। আর করতেও সময় কম লাগে', বক্তব্য রুকমার। তাই পিঠে-পুলি মানেই ঝক্কি নয়। সহজেও বানানো যায় কিছু পিঠে। তবে সেটুকু সময়ও যদি বের করতে না পারেন তা হলে তো থাকলই শহরের অনেক মিষ্টির দোকান।
বছরের এই একটি দিন। যেখানে নারকেল, গুড়, চালের গুঁড়ো, ক্ষীর হয়ে ওঠে ভালোবাসা প্রকাশের ভাষা। বছরের এই একটা দিন। যখন মন ছুটে চলে যায় ঠাকুমা-দিদিমার হেঁসেলে। বছরের এই একটা দিন। যখন আপনিও চান সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই পিঠ-পুলি করে খাওয়াতে আপনার সন্তানকে। ঠিক যেমন যত্ন করে আপনার মা আপনাকে খাইয়েছেন।
নোনতা ম্যারা পিঠে
উপকরণ: চালের গুঁড়ো: ৫০০ গ্রাম, নুন: ১ চা চামচ, জল: প্রয়োজন মতো, আলুসেদ্ধ: ২টো, বড়, কাঁচালঙ্কা কুচি: ১ চা চামচ, নুন: পরিমাণমতো, হলুদ-লঙ্কাগুড়ো: আধ চা চামচ, সরষের তেল: ১ টেবল চামচ।
প্রণালী: চালের গুঁড়ো হাল্কা করে ২-৩ মিনিট সেঁকে নিন। বেশ ঝুরঝুরে হয়ে গেলে তাতে নুন ও ফুটন্ত জল দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। ঠান্ডা হতে দিন। এবার ওই চালের গুড়ো বালো করে মেখে নিন। প্রয়োজনে একটু জল দিতে পারেন। ঢাকা দিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। অন্য পাত্রে তেল গরম করে আলুসেদ্ধ সব মশলা গিয়ে নেডে় নিন। ঝাল পুর তৈরি করুন। মেখে রাখা চালের গুঁড়ো থেকে লেচি কাটুন। এবার পুলির আকারে গড়ে নিন। স্টিমারে জল গরম করে পিঠে গুলো ৩০ মিনিট ভাপিয়ে নিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে গুড় বা শুঁটকির ভর্তা বা মাংসের ভুনার সঙ্গে খেতে পারেন।
রেসিপি সৌজন্য: রুকমা দাক্ষী
সোয়া আমন্ড পাটিসাপটা
উপকরণ: মুগ ডাল গুঁড়ো: ১ কাপ, আমন্ড মিল্ক: ১ কাপ, পেস্তা কুচি: ৬ চা চামচ, আখরোট কুচি: ৬ টেবল চামচ, মাখনা: আধ কাপ, মধু: আধ কাপ, সয়া মিল্ক: ২ কাপ, সুজি: আধ কাপ, ময়দা: আধ কাপ, খেজুরের গুড়: ১ কাপ, ঘি: আধ টেবল চামচ, সরষের তেল: ১ টেবল চামচ।
প্রণালী: পাত্র ঘি গিয়ে গরম করে নিন। তারপর পেস্তা, আখরোট, সয় মিল্ক, মাখনা, মুগ ডাল, মধু দিয়ে পুর তৈরি করুন। আমন্ড মিল্ক, চালের গুঁড়ো, সুজি, ময়দা আর গুড় দিয়ে ব্যাটার তৈরি করে নিন। এবার অন্য পাত্রে তেল ব্রাশ করে পাটিসাপটা আকারে ব্যাটার ভেজে নিন। ভিতরে পুর দিন। খেজুরের গুড়, পেস্তা, আখরোট দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি সৌজন্য: অপরাজিতা ঘোষ
গুড়, নারকেল, সন্দেশের আদরে ভাপানো পিঠের জাদু-ছোঁয়া মিলবে এখানে...
আর এই সংক্রান্তি ঘিরে নিত্যনতুন পিঠের আয়োজন চলছে ঘরে ঘরে। পিছিয়ে নেই রেস্তোরাঁগুলোও। মিষ্টি মুখে উৎসব উদাযপনে মেতে উঠেছে চিলেকোঠা। সত্যি বলতে কী, অনেক বাঙালিরই পৌষ সংক্রান্তির কথা তখনই মনে পড়ে, যখন তাঁরা দেখেন, প্রতিবেশী নানান রাজ্য থেকে দলে দলে মানুষ গঙ্গাসাগরের পথে চলেছেন। তবে হ্যাঁ, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালা, দুই রাজ্যেই নারকেলের মিষ্টি বিশেষ করে সংক্রান্তির সময় খুবই জনপ্রিয়। অতএব সংক্রান্তিতে পুলিপিঠে, পাটিসাপটার খুব কদর। কিন্তু পিঠে-পুলি তৈরি করতে ঝক্কি কম নয়। তাই চিলেকোঠা নিয়ে এসেছে মকর সমক্রান্তির বিশেষ মেনু। যার নাম পিঠে-পুলি। পছন্দের মেনু দিয়ে সংক্রান্তি বরণের ব্যবস্থা করে রেখেছে। ভাপা পিঠে, সাতপুরি, নলেন গুড়ের চুসির পায়েস।
এ তো গেল পুরনো দিনের পিঠের কথা। চিরাচরিত সেই পিঠের স্বাদ বদল করতে নিয়ে এসেছে মাছের পাটিসাপটা, ছানার পাটিসাপটা, কড়াইশুঁটির পাটিসাপটা-সহ বিভিন্ন উপাদেয় পিঠে। চলতি মাসের ১৪ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই মেনু। মাথাপিছু খরচ পড়বে ২১০ টাকা। সঙ্গে ট্যাক্সও রয়েছে।
আরও পড়ুন:পিঠের আমি পিঠের তুমি
'বড়' মাংসের কালা ভুনা, খেলেই মাফ সব গুনাহ!
রান্নার পরে মাংসের রঙ কালো হয়ে যায় বলেই হয়তো এই খাবারের নাম কালো ভুনা। মূলত গোরুর মাংসেই রান্না হয়ে থাকে। তবে অনেকেই খাসির মাংস বা মুরগীর মাংসেও রান্না করে থাকেন। তবে, বাড়ি বসেই তৈরি করে নিন 'বড়' মাংসের কালা ভুনা।
উপকরণ:
মাংস-৩ থেকে ৪ কেজি (হাড় ছাড়া), গোলমরিচ গুঁড়ো-১/২ চামচ, হলুদ গুঁড়ো-১ চামচ, জিরে গুঁড়ো- ১/২ চামচ, ধনে গুঁড়ো-১/২ চামচ, পেঁয়াজ বাটা-১ চামচ, রসুন বাটা-২ চামচ, আদা বাটা- ১/২ চামচ, গরম মশলা, পেঁয়াজ কুঁচি-১/২ কাপ, কাঁচা লঙ্কা-কয়েকটা, নুন-স্বাদমতো, সরষের তেল।
পদ্ধতি
প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা লঙ্কা বাদে নুন, তেল ও বাকি সব মশলা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে ম্যারিনেট করতে হবে। এর পর ম্যারিনেট করা মাংস আভেনে হালকা আঁচ রেখে তুলে দিতে হবে। এবার দুই কাপ জল দিয়ে আবারও ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে।
মাংস সেদ্ধ হতে সময় লাগবে। এর পর গরম জল এবং আভেনের গ্যাস বাড়িয়ে নিতে হবে। মাংস নরম হয়ে যাবার পর রান্নার পাত্রটি সরিয়ে রাখতে হবে। এবার অন্য একটি কড়াই নিয়ে, তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা লঙ্কা ভালো করে ভাজতে থাকুন। সোনালী রং হয়ে এলে তাতে মাংস দিয়ে, হালকা আঁচে ভাজতে থাকুন। এর পর কালো হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তা নাড়তে থাকুন, খেয়াল রাখবেন যেন পুড়ে না যায়।
মিষ্টি সুখের উল্লাসে! টপাটপ রসগোল্লা-সন্দেশ-পিঠে থুড়ি মিষ্টি খাওয়ার উৎসব...
এক কথায়, বাঙালির ভুরিভোজে মিষ্টির ভূমিকা অনেকটা বিয়ের পিঁড়িতে বরের মতো। একবারে মুখ্য পাত্র। তাই নববর্ষ হোক বা বিজয়া দশমী, ক্রিসমাস হোক বা নতুন গুড়ের মরসুম। শুধু বাঙালি কেন বাংলার রসগোল্লা আর সন্দেশের গুণগ্রাহী, থুড়ি রসগ্রাহী আসলে ছড়িয়ে আছে বিশ্বের নানা প্রান্তে।
কিন্তু বাঙালির রসনা আর মোটেও শুধু রসগোল্লা আর সন্দেশে তৃপ্ত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির পাতে এক দিকে যেমন উঠে এসেছে কাজু বরফির মতো অবাঙালি মিষ্টি, তেমনই অন্যদিকে সাবেকি মিষ্টিতে লেগেছে চকোলেটের মতো নানা স্বাদের ছোঁয়া। ভোজনরসিক হলেও অনুসন্ধিৎসু জাতি বাঙালি। যে কোনও কিছুই, বিশেষ করে খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে তার জুড়ি মেলা ভার। মিষ্টিও তাই বাদ যায়নি সেই তালিকা থেকে।
কলকাতার অ্যাক্রোপলিস মলে জানুয়ারির হালকা শীতে মিঠে রোদ মেখে এমনই মিষ্টিপ্রিয় মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। একদিকে কুপন কেটে নানা মিষ্টি স্টল ঘুরে উইন্ডো শপিংয়ে মিষ্টি খেতে, অন্যদিকে, অনেকেই নিজেদের হাতে তৈরি মিষ্টি তৈরি করে বিচারকদের চমকে দিতে। 'মিষ্টি মস্তি' নামের এই উৎসবে যোগ দিয়েছিল কলকাতার অসংখ্য প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান। ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মিষ্টি উৎসব। অনুষ্ঠানে ছিল নলিন চন্দ্র দাস অ্যান্ড সন্স, শ্রী কৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, দ্য গ্যালি, লোকনাথ স্যুইটস, মিলিজ, মিষ্টি কথা, গোপালের মোয়া, কুলফিওয়ালা-বালেশ্বর কুলফি, ভীম নাগস ব্রাদার শ্রীনাথ নাগ।
মিষ্টি তৈরির প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অনেকেই। বিচারকের আসনে ছিলেন ফুড ব্লগার ও রন্ধনশিল্পী বৈশাখী মুখোপাধ্যায় এবং আফরার শেফ সঞ্জীব সাহু। তাঁরাই তিন বিজয়ী শেফালি দাস, সুদেষ্ণা কোলে এবং মিটু দত্তের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
ভোজের শেষ পাতে পড়ুক টক-মিষ্টি টোপা কুলের চাটনি!
স্কুলে সরস্বতীর দোহাই দিয়ে একটা দিন বইপত্র তুলে রাখার ছুতো। এছাড়া আরও রংবেরঙের আনন্দের মুহূর্ত অপেক্ষা করে কিশোর-কিশোরীদের জন্য। কিন্তু ভুল করেও কুলের স্বাদ নিতে রাজি হয় না। কেননা দীর্ঘদিনের বিশ্বাস, পরীক্ষায় যাতে ফেল করতে না হয়, সে কারণে সরস্বতী পুজোর আগে কুল দাঁতে কাটে না পড়ুয়ারা।
পুজোর আগে কুল খেয়ে নিলে মনটা একটু কিন্তু-কিন্তু করে বটে, তবে এই দিন শেষপাতে কুলের চাটনি ছাড়া চলে কি?
তাই এই বিশেষ দিনে শেষ পাতে থাকতেই হোক টোপা কুলে চাটনি।
টোপা কুলে চাটনি
উপকরণ
টোপা কুল- ২৫০ গ্রাম, সর্ষের তেল-এক চামচ, পাঁচ ফোড়ন-সামান্য, শুকনো লঙ্কা-২টো, চিনি-২০০ গ্রাম, নুন, হলুদ গুঁড়ো,
পদ্ধতি
প্রথমে টোপা কুল ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। কুলের খোসাগুলো একটু ছাড়িয়ে নিন, যাতে চাটনির রস ভাল করে ভিতরে ঢুকতে পারে। এবার কড়াইতে এক চামচ সর্ষের তেল দিন। একটু পাঁচ ফোড়ন আর দুটো শুকনো লঙ্কা তেল গরম হলে দিয়ে দিন। এর মধ্যে ধুয়ে রাখা কুলগুলো দিন। এর মধ্যে এক চা চামচ নুন আর এক চামচ হলুদ গুঁড়ো দিন।
একটু নেড়ে নিয়ে এর মধ্যে ২০০ গ্রাম চিনি দিন। যদি চান, চিনি না দিয়ে গুড়ও দিতে পারেন। এবার আন্দাজমতো জল দিন। এবার একটু নাড়াচাড়া করুন। এবার ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ হাল্কা আঁচে রেখে দিন। মিনিটপাঁচেক পর ঢাকনা খুলে দেখবেন, আপনার কুলের চাটনি রেডি।
আরও পড়ুন: 'বড়' মাংসের কালা ভুনা, খেলেই মাফ সব গুনাহ!
হরেক রকম পানীয়ের সম্ভার! সপ্তাহ শেষে গলা ভিজিয়ে আসুন এই ঠিকানায়
মিনিস্ট্রি অফ বুজ
নিউ টাউনের বুকে গজিয়ে ওঠা এই 'রেস্ট্রো পাব'-এর নাম 'মিনিস্ট্রি অফ বুজ'। পানীয় যারা ভালোবাসেন, পার্টি-আড্ডা যারা পছন্দ করেন, পানীয়র সঙ্গে পছন্দের নানা পদ যারা পেতে চান, তাঁদের অন্য এ-এক আদর্শ ঠিকানা। কারণ এখানে পকেট-ফ্রেন্ডলি বাজেটের মধ্যে আপনি পাবেন খানা-পিনা-গানার এক জপ্পেশ ককটেল! চমৎকার এই পাব-এ পা রাখলেই মনে ধরা দেবে এখানকার অপূর্ব অন্দরসজ্জা। পানীয়র ছিপি দিয়ে সাজানো দেওয়াল, সেই সাদা দেওয়ালে ছড়িয়ে থাকা দড়ি-বন্দুকের ডেকরেশনে এক অদ্ভুত চমকে চমকিত চার-দেওয়াল। তারই মাঝে ঝুলন্ত গাছের শোভা, ইতিউতি টবে রাখা গাছের মাঝে এক মায়াবী পরিবেশ। স্বপ্নের মতো সুন্দর অন্দরসজ্জায়, মায়াবী আলোর মাঝে মিলবে ফ্যান্সি ককটেল থেকে চিলড বিয়ার, অপূর্ব ডিজে মিউজিক থেকে হাল্কা লাইভ মিউজিক, মনোলাভা স্ন্যাকস থেকে ডিনারের হাতছানি। ককটেল শুরু হচ্ছে ২৯৯টাকা থেকে। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে রেস্তোরাঁ।
ট্রাফিক গ্যাসট্রো পাব
শহরে আর এক জায়গা হল রাজারহাটের ট্রাফিক গ্যাসট্রো পাব। যেখানে এক মনোরম পরিবেশে সুস্বাদু সব পানীয় ,খাবার সহযোগে আড্ডা দিতে পারেন সহজেই। সে বাজেট হোক বা রাজনীতিতে উত্তাপ! একের পর এক পানীয়তে চুমুক দিলে চমখ যে লাগবেই সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
চমৎকার এই পাব-এ পা রাখলেই তুমসে না হো পায়েঙ্গে, বেঙ্গল হারিকেন, মিন্ট জুলেপের মতো পানীয়। সঙ্গে অবশ্য মুখরোচক খাবারও পাওয়া যাবে। যেমন- তন্দুরি হট ডগ, হাইওয়ে মুরগ হান্ডি, সিজার স্যালাডও। যেগুলোর দাম শুরু হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে। সঙ্গে ট্যাক্স চার্জ। পানীয়ের দাম পড়বে ৪২৫-৬৫০ টাকা সঙ্গে ট্যাক্স।
অতিথি দেব ভব! শেফ গড়তে উদ্যোগ ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কালিনারি চ্যালেঞ্জ’-এর
সব থেকে বড় কথা, এই মুহূর্তে যে ক’টি ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় তার মধ্যে অন্যতম হোটেলের চাকরি। হোটেল ব্যবসার রমরমাই বাড়িয়ে দিচ্ছে এই ক্ষেত্রে কেরিয়ার গড়ার সুযোগ। পর্যটন শিল্পের উন্নতি হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্সটিকে সম্ভাবনাময় করে তুলেছে। পাশাপাশি মেডিক্যাল ট্যুরিজমও হোটেল ম্যানেজমেন্ট-এর প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ বাড়াচ্ছে। সারা বছরই বিভিন্ন রাজ্যে প্রচুর লোক আসেন চিকিৎসা পরিষেবার জন্য। ফলে সব মিলিয়ে বাড়ছে চাকরির পরিসর।
কলকাতার ছেলেমেয়েদের আরও বেশি সংখ্যায় এই পেশায় আসতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কালিনারি চ্যালেঞ্জ’-এর আসর বসেছিল কলকাতার এনআইপিএস হোটেল ম্যানেজমেন্টে। দেরাদুন ও পুনের পর কলকাতায় হয় এই উদ্যোগ। এখানে অংশগ্রহণ করেন ১০০-র বেশি প্রতিযোগী। এদের মধ্যে কেউ দেশের বিভিন্ন জায়গার হোটেল ও রেস্তোরাঁ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সব শেষে প্রতিযোগীদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: হরেক রকম পানীয়ের সম্ভার! সপ্তাহ শেষে গলা ভিজিয়ে আসুন এই ঠিকানায়
বছরভর থাকুক প্রেম, রইল কলকাতার কিছু সেরা জায়গার হদিশ...
বিপনী থেকে রেস্তোরাঁ, সর্বত্র প্রেম দিবসকে সামনে রেখে প্রস্তুতি তুঙ্গে। কাছের মানুষটির সঙ্গে খানাপিনা ,ঘোরার প্ল্যান এই সব সকলেই করে থাকেন। তার আগে জেনে নিন কোথায় যাবেন।
ওসান গ্রিল: আর পাঁচটা রেস্তোরাঁ থেকে সম্পূর্ন আলাদা একেবারে অভিনব সজ্জায়, নতুন চিন্তাভাবনায় তৈরি ‘ওশ্যান গ্রিল’। যেখানে সি-ফুডের পাশাপাশি রয়েছে এ দেশ ও দেশের নানান খাবার। এককথায় ওয়ার্ল্ড ক্যুইজিনের স্বাদ নিয়ে হাজির এই রেঁস্তোরা। প্রেমের সপ্তাহে কাছের মানুষটার হাত ধরে রোম্যান্টিক ডিনার বা লাঞ্চ করতে যেতেই পারেন সেক্টর ফাইভের এই ঠিকানায়। ওই দিন থাকবে কাপল প্যাকেজ। সকাল ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে রেস্তোরাঁর ফটক।
বন অ্যাপেতিত: সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে এই রেস্তোরাঁ। প্রেমদিবস উপলক্ষে চলছে 'পেইন্ট দ্য টাউন রেড'। যার অর্থ হল রেড ভেলভেট কফি, রেড ভেলভেট কোল্ড কফি, রেড বেল পেপার উইথ ম্যাক্রোনি স্যালাড, রেড ভেলভেট ক্রিম চিজ। লাল হল ভালোবাসার প্রতীক। আর সে জন্যই শেফ সমস্ত খাবারে রেখেছেন লালের ছোঁয়া। সে ভেজ হোক আর নন ভেজ। হাজরা রোড ও সল্টলেকের সেক্টর ওয়ানে রয়েছে এদের রেস্তোরাঁ। দাম শুরু হচ্ছে মাত্র ৭০ টাকা থেকে। সঙ্গে অবশ্য ট্যাক্স। গোটা ফেব্রুয়ারি মাস ধরে চলবে এর বিশেষ অফার।
পরাঠে ওয়ালি গলি: বাঙালির উদরপূর্তির অনেক রকম নিদর্শন রয়েছে ইতিহাসের পাতায়| চিরন্তন বাঙালি রান্না তো বটেই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও নানান স্বাদ| নবাব ঘরানা থেকে পাশ্চাত্যের সংমিশ্রণ বাঙালির রসনাকে করেছে সমৃদ্ধ| আর যেহেতু চলছে প্রেমের সপ্তাহ তাই চিত্তাকর্ষক মেনু তৈরি করেছে পরাঠে ওয়ালি গলি। শরৎ বোস রোডের এই রেস্তারাঁয় চলছে বসন্ত মেনু। এমন সব কম্বিনেশনে পরোটা তৈরি করা হচ্ছে যা আগে কোথাও চেখে দেখা হয় নি। দাম শুরু হচ্ছে ১০৯ থেকে। সঙ্গে ট্যাক্স।
ট্রাফিক গ্যাসট্রো পাব: শহরে আর এক জায়গা হল রাজারহাটের ট্রাফিক গ্যাসট্রো পাব। যেখানে এক মনোরম পরিবেশে সুস্বাদু সব পানীয় ,খাবার সহযোগে আড্ডা দিতে পারেন সহজেই। সে বাজেট হোক বা রাজনীতিতে উত্তাপ! একের পর এক পানীয়তে চুমুক দিলে চমখ যে লাগবেই সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চমৎকার এই পাব-এ পা রাখলেই মিলবে অ্যাট্রাক, হার্ট ক্রাকারের মতো পানীয়। সঙ্গে রয়েছে প্যেয়ার ঝুকতা নেহি, প্যেয়ার কি পঞ্চনামা-সহ বিভিন্ন আইটেম। খাবারের দাম শুরু হচ্ছে ২৯৯ থেকে। আর পানীয় দাম শুরু হচ্ছে ৪৫০ থেকে। তবে, অফারটি চলবে শুধুমাত্র ১৪ তারিখেই।
উত্তমের প্রিয় ভেটকির কাঁটা চচ্চড়ি বা ভাপা কাঁকড়া! পাতে পড়বে আপনারও
জমিয়ে রান্না করতেও ভালবাসতেন সুপ্রিয়াদেবী৷ সেই সব রেসিপি যত্ন করে লিখে রেখেছিলেন তিনি৷ এবার সেই সব রেসিপিই নিয়েই কলকাতার এক নামী রেস্তোরাঁয় শুরু হচ্ছে বিশেষ মেনু! নাম বেণুদির রান্নাবান্না। ডোভার লেনের বিখ্যাত সেই রেস্তোরাঁ চিলেকোঠায় বসতে চলেছে এই বিশেষ পর্ব। তাঁর লেখা রেসিপির খাতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে সেই সব বিশেষ পদ। যেমন-চাপ ফ্রাই, সুপ্রিয়ার চিকেন, মহানায়কের পছন্দের ভেটকির কাটা চচ্চড়ি৷ যার ট্যাগ লাইন হচ্ছে ফ্লেভারস অব নস্টালজিয়া। এখানে এলে মিলবে বেণুদির প্রিয় ১০টি আইটেম। আর সেই সব চেখে দেখার সুযোগ থাকছে আপনারও৷
মুরগির স্যুপ, মাংসের দো পিয়াজি, চিংড়ি মাছের বাটি চচ্চড়ি, ভাপা কাঁকড়া-সহই মিলবে এখানে৷ চিলেকোঠার কর্ণাধার দেবলীনা শহরের ভোজনরসিক জন্য নিয়ে এসেছেন এই উদ্যোগ। তিনি নিজেও সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন। শেষ পাতে পড়বে মূলোর অম্বলও! ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই সুযোগ। দু'জনের জন্য খরচ পড়বে হাজার টাকা। সঙ্গে ট্যাক্স।
তাহলে আর দেরি কেন, জমিয়ে ভোজ সারুন চিলেকোঠায়৷
আরও পড়ুন: ডায়েট-পাতে মন জিতছে কিনোয়া
Mahashivratri 2020: মঙ্গল কামনায় উপোস করেছেন? তারপর খান রাঙা আলুর ক্ষীর...
উপকরণ: রাঙা আলু কোরানো ২ কাপ, দুধ ১ লিটার, তেজপাতা ২টো, এলাচগুঁড়ো ১/২ চা-চামচ, গুড় ১ কাপ (বা স্বাদমতো), আমন্ড ৭-৮টা (কুচিয়ে নেওয়া), কাজু ৮-১০টা (দু’টুকরো করে নেওয়া), কিসমিস ১০-১২টা, ঘি ৩ টেবলচামচ, সন্ধন নুন স্বাদমতো।
প্রণালী: কোরানো আলু ভালো করে ধুয়ে নিয়ে শুকনো করে নিন। ননস্টিক প্যানে ঘি গরম করে তাতে রাঙা আলু ভেজে নিন। আলাদা করে তুলে রাখুন। বাকি ঘিয়ে কাজু, কিসমিস আর আমন্ড সোনালি করে ভেজে নিন। সসপ্যানে তেজপাতা এবং এলাচগুঁড়ো দিয়ে দুধ ফোটান। দুধ ফুটে উঠলে তারমধ্যে রাঙাআলু দিয়ে দিন। সমানে নাড়তে থাকুন। এবার এতে ভেজে রাখা কাজু, আমন্ড ও কিসমিস মেশান।রাঙা আলু দুধের সঙ্গে মিশে গেলে এর মধ্যে গুড় মেশান। চাইলে গুড়ের পরিবর্তে চিনিও মেশাতে পারেন। একটা কথা খেয়াল রাখবেন... ক্ষীর সব সময়ে কম আঁচ রান্না করবেন। এতে ক্ষীরের স্বাদ আরও ভালো হয়। পরিবেশন করার আগে উপরে গ্রেটেড কাজু ও আমন্ড ছড়িয়ে দিতে পারেন। ঠান্ডা হোক বা গরম দু’ভাবেই খেতে সুস্বাদু রাঙা আলুর ক্ষীর।
এক্সপায়ারি ডেট এ বার মিষ্টিতেও
এবার ওষুধ এবং বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যের মতো মিষ্টির ক্ষেত্রেও ব্যবহারের মেয়াদকাল সংক্রান্ত দিন জানিয়ে (এক্সপায়ারি ডেট) দেওয়া বাধ্যতামূলক করল কেন্দ্রীয় সরকার৷গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এই মর্মে (ফাইল নং-১৩ (২৯) ২০১৯/ মিল্ক / আরসিডি / এফএসএসএআই)
ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস (অ্যাক্ট, ২০০৬) অথরিটি অফ ইন্ডিয়া নির্দেশ জারি করেছে৷ এই নির্দেশ লাগু হবে আগামী জুন মাসের ১ তারিখ থেকে৷ মেয়াদ-উত্তীর্ণ বিষাক্ত মিষ্টি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওই নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে৷
ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্যাকটেজাত মিষ্টির ক্ষেত্রেই নয়, খুচরো (লুজ) মিষ্টির ক্ষেত্রেও সেই মিষ্টি কবে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং তার মেয়াদ কতক্ষণ বা কবে পর্যন্ত, তা বাধ্যতামূলক ভাবে মিষ্টি যে ট্রেতে রাখা থাকে তাতে রাখতে হবে৷ এতদিন শুধুমাত্র প্যাকেটজাত মিষ্টির ক্ষেত্রেই তার প্রস্তুতি বা উৎপাদনের তারিখ এবং কতদিন পর্যন্ত 'ভালো ভাবে' তা ব্যবহার (খাওয়া) করা যাবে, তা লেখা বাধ্যতামূলক ছিল৷ নতুন নির্দেশে খুচরো মিষ্টির ক্ষেত্রেও তা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে৷ ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে এই নিয়ম বিক্রেতাদের মানতে হবে৷ কোন মিষ্টির ব্যবহারের মেয়াদ কতক্ষণ বা কতদিনের হবে, তা ঠিক করবে এফবিও৷ এ ব্যাপারে এফএসএসএআই-এর ওয়বেসাইটে বিস্তারিত দেওয়া রয়েছে৷
নতুন এই নির্দেশে বিপাকে পড়েছেন এ রাজ্যের মিষ্টি বিক্রেতারা৷ রাজ্যে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের সংগঠন 'পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি'র বক্তব্য, এ রাজ্যে মূলত ছানার মিষ্টি প্রস্তুত করা হয়৷ এই ধরনের মিষ্টির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মেনে চলা বেশ মুশকিল এবং এখানে সেই পরিকাঠামোও নেই৷ এর ফলে রাজ্যের মাঝারি এবং ছোট (স্থানীয়) মিষ্টি বিক্রেতারা ঘোরতর সমস্যায় পড়বেন বলেই সমিতি মনে করছে৷
কলেজ পাড়ার খাওয়াদাওয়া
কলেজ বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা পেয়েছে অনেক দিন হল। শুধু উপাধিতে নয়, তারপর থেকে প্রতিষ্ঠানের অন্দরমহলেও বদল হয়েছে অনেক। বদলেছে বিল্ডিংয়ের ঠাঁটবাট, বদলেছে ক্লাসরুমের চেহারা। বদলে গিয়েছে আড্ডার জায়গাগুলোও। সন্ধের অন্ধকার কলেজ স্ট্রিটের উপর হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকা জ্যোৎস্না-রঙা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য এখনও অনেক কথা বলে। কত না কথা বলে পুরনো দিনের। সরলরেখা ধরে সে সব পুরনো দিন থেকে এখনকার দিনে এসে পৌঁছলে আগামী দিনের ছবিটাও মৃদু মৃদু চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
প্রমোদদা। টিফিন খাওয়ার উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্সির আড্ডা-রাজনীতি-গানবাজনার রাজধানীর রাজ্যপাল প্রমোদদা, বহুদিন আগেই অস্তমিত হয়েছেন 'বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে। এখন সেখানে নতুন ক্যান্টিন। নতুন টেবিল-চেয়ার। নতুন মানুষজন। তবুও 'ব্যাডিকোর্ট'-এর দিকের দেওয়াল ঘেঁষা টেবিলের কাছে এগিয়ে গেলেই বহু বছরের ওপার থেকে ভেসে আসে টেবিলে তাল দেওয়া 'দ্য ইন্টারন্যাশনাল'-এর চাপা সুর। যার তালে ঝনঝন করে ওঠে টেবিলে রাখা স্টিলের থালা। নেচে ওঠে থালার ওপরের জোড়া এগরোল। ভিতরে প্রমোদদার কড়াই তখন তেতে লাল। বাইরে 'উই উইল স্ট্রাইক হোয়াইল আয়রন ইজ হট'-এর বোল।
- 'এই প্রমোদদা, আজ টাকা নেই। লিখে রাখো। কাল দেবো।'
- 'দিয়ো কিন্তু! অনেক জমে গেল!'
প্রমোদদার সেই ক্যান্টিন এখন ইতিহাসমাত্র। উত্তাল নকশালযুগ, ম্যাড়ম্যাড়ে নব্বই, ক্লান্ত কিন্তু ফাঁটবাজ দু'হাজারের সাক্ষী প্রমোদদার ক্যান্টিনের জায়গায় এখন প্রেসিডেন্সি পেয়েছে নতুন ক্যান্টিন। একখানা নয়। খাবার জায়গা এখন তিন-তিন খানা। পুরুষোত্তম, সৃষ্টি এবং সুকুমার। পদেও এসেছে বদল। এগরোল, ফিশফিংগার, লাল-চা'র বদলে প্রতিপত্তি বাড়িয়েছে মোমো, যুক্ত হয়েছে ভাত-ডালের মিল। 'আজ টাকা নেই। লিখে রাখো। কাল দেবো'-র দিন গিয়েছে। টাকা দিয়ে তবেই নিতে হয় স্লিপ। স্লিপ জমা দিলে তবেই আসে খাবার।
দেবনীল পাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বিভাগ ইতিহাস। তাঁর কথায়, 'পেট অল্প ভরানোর জন্য সুকুমারের দোকানই ভরসা। চা, টিফিন-কেক, বিস্কুট পাওয়া যায় এখানে। পুরোদস্তুর পেট ভরাতে সৃষ্টি বা পুরুষোত্তম।' তবে খাবারের সন্ধান যে শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের অন্দরমহলেই চলে, তা নয়। একটু উড়ণচণ্ডী, ইন্টালেকচুয়ালদের এখনও যাতায়াত কফিহাউজে। যাঁরা আলেকালে পকেট একটু ভারী হয়ে ওঠে, তাঁদের গন্তব্য কফিহাউজ ছাড়িয়ে টেস্টি পর্যন্ত। কেউ কেউ এখনও ভরসন্ধেবেলা হাজির হন কলেজ স্কোয়ারের ওয়াইএমসিএ ক্যান্টিনে। টাটকা ঘুঘনি, চিকেন স্টু এবং টোস্টের কাহিনি এখনও কলেজ পাড়ার খাবার-মহাকাব্যের বিরাটপর্বের মতো ট্রাম লাইনের এপারে-ওপারে গুনগুন করে। আগুনখেকো নকশাল নেতারা নাকি এক সময় প্রেসিডেন্সি ছেড়ে ওই ভরসন্ধেবেলায় গিয়ে বসতেন সূর্য সেন স্ট্রিটের ফেবারিট কেবিনে। নব্য-নকশালদের যাওয়া আসা ছিল তৎকালীন কলেজের গায়ের বুড়োদার দোকানে। সে সব এখন স্রেফ গল্পকথায় পর্যবসিত। বুড়োদা কবেই ছাই হয়ে বাতাসে মিশে গিয়েছেন। ফেবারিটের 'আর্বান লেজেন্ড' আগুনখেকো নেতারাও এখন 'তাই তো এমন বুড়ো হয়েই মরি... পলে পলে বাক্স বোঝাই করি'র দলে। নতুন প্রেসিডেন্সি, নতুন কলেজ পাড়া তাঁদের সঙ্গে টেবিল ভাগ করে নেয় না, ভাগ করে নেয় না ধারের খাতার কাগজ।
পকেটের ওজনের ভিত্তিতে পড়ুয়ারা কি বেছে নিচ্ছেন তাঁদের ক্যান্টিন? বছর কুড়ি আগেও যখন, আমলার ছেলে দক্ষিণ কলকাতা থেকে বিলাসবহুল গাড়ি চেপে কলেজে আসত, সেও কি টেবিল ভাগ করে নিত না নৈহাটি থেকে আসা, প্লিট দেওয়া প্যান্ট পরা মফস্সলি ছোকরার সঙ্গে? জিন্স-টিশার্টের উত্তরবঙ্গের মেয়েটা কি 'হয়তো তোমারই জন্য'-এ গলা মেলাত না বাগবাজারের মলিন সালোয়ারের মেয়েটার সঙ্গে? সে সব ছবি কি হারিয়ে যাচ্ছে খাবার বদলের ক্যান্টিন থেকে? সরলরেখা ধরে আজকের সময়ে এসে সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় সন্ধের জ্যোৎস্না-রঙা প্রেসিডেন্সি। ক্যান্টিনের টেবিল তখন হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ইলেকট্রনিক বিলের দিকে।
কোন খাবারের চল বেশি
রোল, মোমো (সৃষ্টি আর পুরুষোত্তম)
টাটকা ঘুঘনি, চিকেন স্টু, টোস্ট (ওয়াইএমসিএ ক্যান্টিন)
চাউমিন, মোগলাই (টেস্টি)
লাল চা, বিসেকুট, টিফিন কেক (সুকুমারের দোকান)
উৎসব তো ছুতো, স্বাদের টানে ঢুঁ মারুন শহরের সেরা ঠিকানায়
চলতি মাসের ৯ ও ১০ তারিখ গুলাব শরবত, বাদাম শরবত, দুধ গুলাব শরবত, আম খাস-নিয়ে হাজির হয়েছে এই রেস্তোরাঁ। খাস কলকাতাতেই বাদশাহি আমেজ পেতে পৌঁছে যান Oudh 1590-এর যে কোনও আউটলেটে। কাঠের দরজা ঠেলে ঢুকতেই কানায় কানায় মিলবে নবাবি মেজাজের স্বাদ, সঙ্গে জাফরানি খুশবু মিলেমিশে গিয়েছে। দাম পড়বে মাত্র ১২০-থেকে ১৪০টাকা। সেই সঙ্গে অবশ্যই ট্যাক্স।
সপ্তাহ পেরোলেই দোল। আগাম দোলে মেতে উঠেছে সবাই। আর বাঙালি মানেই পেটুক! খাওয়ার ব্যাপারে কোনও না নেই। সে ফুটপাতের বাঙালি পাইস হোটেল থেকে পাঁচতারা, হাইওয়ের ধারে ধাবা হোক বা ঝাঁ চকচকে চিনে রেস্তোরাঁ, ফুচকার স্টল থেকে পিত্জার সুখী প্লেট-সব ক্ষেত্রেই তাদের বৈষম্যহীন অবাধ যাতায়াত।
তাই এই বছর দোল উপলক্ষে সেই সকল পেটুকদের কথা মাথায় রেখে বিরিয়ান নিয়ে এসেছে সুবর্ণ সুযোগ। আর বাঙালি মানেই তো বিরিয়ানি প্রেমিক। বিরিয়ানি পছন্দ করেনা এমন মানুষ ক'জন আছে বলুন? আহা! তুলতুলে মাংসের সঙ্গে জাফরান জড়ানো ভাতের কী দারুণ প্রেম! বলা হয় বিরিয়ানি হল ভাত আর মাংসের অপূর্ব যুগলবন্দি, কিন্তু তা কখনই মাংস-ভাত নয়। শরীরে তার মোগলাই তেজ। যদি আপনি নিজেকে বিরিয়ানি প্রেমিক বলে মনে করেন, তাহলে কলকাতার বিশেষ বিরিয়ানি আপনাকে আস্বাদন করতেই হবে| এক সঙ্গে বিভিন্ন রকম স্বাদের বিরিয়ানি মিলবে একই ছাদের তলায়। রোজানা আলু বিরিয়ানি, রোজানা আন্ডা বিরিয়ানি, নবাবি মুরগ বিরিয়ানি, নবাবি গোস্ত, বাদশাহি গোস্ত-সহ বিভিন্ন রকমের বিরিয়ানি সমাহার। তাই উৎসবের মেজাজে নবাবি স্বাদ নিতে হলে অবশ্যই আসতে হবে কালিঘাটের এই রেস্তোরাঁয়। ৭৫টাকা থেকে শুরু করে ২৮০ টাকায় পাওয়া যাবে, সঙ্গে ট্যাক্স। দুপুর ১২টা থেকে খোলা থাকে রেস্তোরাঁর মুল ফটক।
করোনা আতঙ্কে না ভুগে চটপট আজ ডিনারে ওয়ান পট চিকেন পোলাও
উপকরণ
চিকেন-এক কেজি,বাসমতি চাল- দেড় কাপ,লাল লঙ্কাগুঁড়ো -১ চা চামচ,নুন-স্বাদ মতো,আদাবাটা-২ টেবিল চামচ,রসুন বাটা- ২ টেবিল চামচ,সাদা তেল-৪ টেবিল চামচ,গোটা জিরে-১ চা চামচ,লবঙ্গ- ৬ থেকে ৮টা,ছোট এলাচ-৬টা, তেজপাতা- ২টো, দারচিনি- ২ ইঞ্চি, পেঁয়াজ- ২টো মাঝারি(টুকরো করা),টমেটো- ৩টে মাঝারি(কুঁচানো),দই- ১/২ কাপ,চিকেন স্টক- ৩ কাপ,তাজা ধনেপাতা- কয়েকটা।
প্রণালী
১ ইঞ্চি সাইজের টুকরোয়
কেটে একটা বাটিতে রাখুন। ওর মধ্যে ১/২ চা চামচ লঙ্কগুঁড়ো, নুন, অর্ধেক আদাবাটা, অর্ধেক রসুনবাটা দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ম্যারিনেট করুন। এবারে করাই তে তেল গরম করে জিরে, লবঙ্গ, এলাচ, তেজপাতা ও দারচিনি ফোড়ন দিন। সুন্দর গন্ধ বেরোলে পেঁয়াজ দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিন। বাকি আদাবাটা, রসুনবাটা ও লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে ২ মিনিট ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে টমেটো, নুন ও দই দিয়ে আঁচ বাড়িয়ে ২ মিনিট ভাল করে ফুটিয়ে আঁচ কমিয়ে চাল, চিকেন ও ধনেপাতা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এর পর সিদ্ধ হয়ে গেলেই তৈরি ওয়ান পট চিকেন পোলাও।
রঙিন জলে মজতে চান? রইল সস্তায় সেরা ঠিকানার হদিশ
অনেক অফিসেই সোমবার ছুটি। অনেকের মঙ্গলবার। তাই দেখে দিন শহরের কোথায় কেমন খানাপিনার ব্যবস্থা রয়েছে। সল্টলেকের ফ্রাইডে রিলিজে সোম এবং মঙ্গল থাকছে নানা রকম ককটেল। দুজনের জন্য খরচা পড়বে ৭০০ টাকা। সোল দ্যা স্কাই লাউঞ্জেও থাকছে প্রচুর অফার। খোলা আকাশের নীচে পছন্দের পানীয়ে চুমুক দিন, সঙ্গে থাকুক পছন্দের গান।
রঙিন পসরা সাজিয়ে বসেছে আইবিস রাজারহাটও। হোলি স্পেশ্যাল নানা রকম পানীয় থাকছে। থাকবে অরেঞ্জ মোহিতো, পিচ আইস টি, ম্যাঙ্গো ম্যাজিক, স্মোকি পাইনঅ্যাপেল ইত্যাদি। দুজনের জন্য খরচা মোটে ৩০০। কর অতিরিক্ত।
মুম্বইয়ের স্ট্রিট ফুড এক ছাদের নীচে
এলাচের গন্ধ ওড়া ‘বম্বে কাটিং চায়’ থেকে ‘বড়া পাও’, ‘পাও ভাজি’ থেকে ‘নবাবি বাতাসা’ বা ‘এগ পাও’, ‘এগ ভুজুরি পাও’ কিংবা ‘মসালা ওমলেট পাও’ --- মুম্বইয়ের বিভিন্ন আমিষ-নিরামিষ স্ট্রিট ফুড এ বার কলকাতায় পাওয়া যাবে একই ছাদের তলায়। শহরের কিছু রেস্তোরাঁয়, ঝাঁ চকচকে মলের ফুডকোর্টে খুঁজলে মুম্বইয়ের কিছু স্ট্রিট ফুড কলকাতাতেও পাওয়া যায়। তবে শুধুই মুম্বইয়ের স্ট্রিট ফুডের রেস্তোরাঁ?
কিন্তু এত কিছু থাকতে হঠাৎ মুম্বই স্ট্রিট ফুড কেন? চলতে শুরু করার অপেক্ষায় থাকা রেস্তোরাঁটির মালিক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘রাস্তার খাবারের প্রতি কলকাতার মানুষের অদ্ভুত আকর্ষণ। সেই থেকেই এমন একটা রেস্তোরাঁ তৈরি করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। মুখরোচক যে সব খাবার আমরা পেট ভরানোর চেয়েও মন ভরানোর জন্য খাই, সেই খাবারই পাওয়া যাবে এই রেস্তোরাঁয়।’ হিমাদ্রি জানাচ্ছেন, তাঁর রেস্তোরাঁয় দহি পাপড়ি চাট, দহি সামোসা, টোকরি চাট, আলু টিক্কির মতো মুম্বইয়ের জনপ্রিয় হরেক রকম চাট পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে হিমাদ্রির বক্তব্য, হাতিবাগান দিয়ে সূচনা হবে, তবে তার পর খুব তাড়াতাড়ি কলকাতার অন্য কয়েকটি প্রান্তে এমন আরও তিনটি রেস্তোরাঁ তিনি খুলবেন।